পঞ্চগড়ের বোদায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

আব্দুল্লাহ্ আল মামুন (বোদা)পঞ্চগড়, প্রতিনিধি:

Date: সোমবার, সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২৪
news-banner
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় এক মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার বিচার চেয়ে এবং অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার সাকোয়া জামিলাতুন নেছা ফাজিল মাদরাসার সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মাদরাসা মাঠে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মাদরাসার ফাজিল ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী পারভেজ ইসলাম, ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী জুবায়ের হাসান মিম, প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা বাবুল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। এসময় প্রতিষ্ঠানটির সর্বস্তরের শিক্ষকসহ শতাধিক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

সাকোয়া জামিলাতুন নেছা ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মফিজ উদ্দীন কিছুদিন আগে মাদরাসায় অনিয়ম দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ছাত্র জনতার তোপের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

এর কয়েকদিন পরেই তিনি মাদরসার ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে ও স্থানীয় সন্ত্রাসীদের নিয়ে আবারও স্বপদে এসে বসেন।


এরই মাঝে গত রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অধ্যক্ষের যোগসাজসে মাদরাসায় আসেন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বাবুল হোসেনসহ কতিপয় সন্ত্রাসীরা। তারা এসেই মাদরাসার গণিত বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে তাকে মারধর শুরু করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা তাকে রক্ষায় এগিয়ে এলে বিভিন্ন শ্রেণির ৮/১০ জন শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করে তারা। পরে তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বক্তারা অধ্যক্ষকে অবিলম্বে বহিষ্কার করাসহ দ্রুত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। এতে তাদের ৫ দফা দাবি তিন দিনের মধ্যে মেনে নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।  অন্যথায় কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন বলে ‍হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা।

এ বিষয়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মফিজ উদ্দীন বলেন, আমি অসুস্থ, এক মাসের ছুটিতে আছি। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে আমার জড়িত থাকার বিষয়টি ভিত্তিহীন। আমার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের ওপর যারা হামলা করেছে আমিও তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিচার চাই। যারা আমার অপসারণ চাচ্ছে, তারা কার প্ররোচণায় এমন দাবি করছে।

সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে ছুটিতে আছি। বর্তমানে কিডনিজনিত রোগে রংপুরে চিকিৎসাধীন। অনেকে অভিযোগ করতেই পারে। আমি অসুস্থ মানুষ। তাছাড়া ইন্ধন কেন দিতে যাব। শুনেছিলাম গণিত বিষয়ের শিক্ষকের নাকি নারী ঘটিত বিষয়ে কয়েকজন অভিযোগ দিতে মাদরাসাতে যান। তারা পরে চলেও যান। তবে মারামারির বিষয়টি পরে শুনেছি। আর আমি অসুস্থ মানুষ। শিক্ষার্থীদের দেখতে কীভাবে যাব। শুনলাম তারা নাকি আমার বহিষ্কার চায়। এটা প্রশাসনিক ব্যাপার। তারা যা ভালো মনে করে করতে পারেন।

বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার নজির বলেন, গত রোববার একটি ইনসিডেন্ট হয়েছিল। স্থানীয় এক ব্যক্তি এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। পরে এনিয়ে একটি হাতাহাতির ঘটনা ঘটে বলে জেনেছি। তবে সোমবার প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। আর সেখানকার অধ্যক্ষ একবার সেচ্ছায় পদত্যাগ করেন বলেও চিঠি পাই। পরে আবার তিনি দায়িত্ব নিয়ে চিঠি দিয়ে বলেন তাকে বাধ্য করা হয়েছিল। যেহেতু প্রতিষ্ঠানটি আরবী বিশ্ববিদ্যায়ের অধিভুক্ত। তারাও ব্যবস্থা নেবেন। আর আমরাও তদন্ত করছি।

Leave Your Comments