পঞ্চগড়ে দুই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার, পুলিশ বলছে হত্যা

আব্দুল্লাহ্ আল মামুন (বোদা)পঞ্চগড়, প্রতিনিধি:

Date: বুধবার, জুলাই ০৩, ২০২৪
news-banner
পঞ্চগড়ে নিখোঁজের পর পৃথক স্থান থেকে দুই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা দুজনেই হত্যার শিকার হয়েছেন। একজনের মরদেহ করতোয়া নদী থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায়, আরেকজনের আম বাগানের ড্রেন থেকে মাটিচাপা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এই দুই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জেলায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। 

পঞ্চগড়ে নিখোঁজের তিন দিন পর টাবুল বর্মন (৪৮) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ মিলেছে মাটি খুঁড়ে। নিখোঁজের তিন দিন পর পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের ডোলোপাড়া এলাকার একটি আম বাগানে ড্রেনের মাটি খুঁড়ে ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

টাবুল বর্মনের বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের লাখেরাজ ঘুমটি এলাকায়। তিনি ওই এলাকায় ভগিরাম বর্মনের ছেলে।

পুলিশ জানায়, গত বুধবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয় টাবুল। তারপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ-খবর পাওয়া যাচ্ছিল না।

বৃহস্পতিবার তার পরিবারের লোকজন পঞ্চগড় সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে পুলিশ তার খোঁজে শুরু করে অভিযান। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চাকলাহাট ইউনিয়নের ডোলোপাড়া এলাকার এক বিশাল আম বাগানের একটি ড্রেন খুঁড়ে পুলিশ টাবুলের মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় তার শরীরে একাধিক স্থানে ধারাল অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল।

সূত্র জানায়, এই হত্যার পেছনে রয়েছে ললিতা রানী নামে এক নারীর হাত।

তাকে আটক করেই তার দেওয়া তথ্য মতেই পুলিশ ওই মরদেহ খুঁজে পায়। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। 

পঞ্চগড় সদর থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায় বলেন, নিখোঁজের জিডি করার পর আমরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় আমরা টাবুলের মরদেহ আমবাগানের একটি ড্রেনের ভেতর থেকে উদ্ধার করি। সেখানে তাকে হত্যা করে মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া ও আসামিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত পুলিশ সুপার মহোদয় প্রেস ব্রিফিং করে আপনাদের জানাবেন।

অন্যদিকে বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের করতোয়া নদীর সাওতালপাড়া ঘাট এলাকায় নিখোঁজের পাঁচ দিন পর নুরুল ইসলাম (৪২) নামে এক ইজিবাইক চালকের হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকেলে নদীর ওই স্থানে মরদেহটি ভেসে থাকতে থেকে স্থানীয়রা পুলিশকে জানায়। নিহত নুরুল ওই ইউনিয়নের কাউয়াখাল এলাকার বাসিন্দা। 

পুলিশ ও তার পরিবারের লোকজন জানায়, গত ২৭ জানুয়ারি সকালে বাড়ি থেকে ইজিবাইক নিয়ে বের হয়ে যায় নুরুল। রাতে বাড়ি না ফিরলে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরদিন দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাঙ্গা এলাকায় তার ইজিবাইকটি পাওয়া যায়। তারপর পরিবারের লোকজন প্রায় নিশ্চিত হয় যে তিনি ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছেন। কিন্তু তারপরও তার কোনো খোঁজ-খবর পাওয়া যাচ্ছিল না। ২৮ জানুয়ারি তার স্ত্রী শেফালি বেগম বোদা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। ৩০ জানুয়ারি অজ্ঞাত ৪ থেকে ৫ জনের নামে অটো ছিনতাই এবং অপহরণের মামলা করেন তিনি। মামলার পর আলম (২৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। 

শুক্রবার বিকেলে নদীর ওই স্থানে মরদেহটি দেখতে পেয়ে খবর দিলে পুলিশ ও তার পরিবারের লোকজন গিয়ে তার মরদেহ শনাক্ত করে। তবে তার সঙ্গে থাকা ১ লাখ ১৬ হাজার টাকা অক্ষত ছিল। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। 

বোদা থানার ওসি মোজাম্মেল হক বলেন, ইজিবাইকটি আমরা দেবীগঞ্জের শালাডাঙ্গা এলাকা থেকে উদ্ধার করেছি। আমাদের ধারণা ইজিবাইক ছিনতাই চক্র ২৭ জানুয়ারিই নুরুলকে হত্যা করেছে হাত-পা বেঁধে নদীতে ফেলে রেখে গেছে। আমরা এই মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছি। অন্য আসামিকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে!

Leave Your Comments