পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে সহকারী প্রধান শিক্ষকের বদলির দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

আব্দুল্লাহ্ আল মামুন,পঞ্চগড় প্রতিনিধি:

Date: বুধবার, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪
news-banner
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে দূর্নীতিবাজ সহকারী প্রধান শিক্ষকের শাস্তি এবং অন্যত্র বদলির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত ঐ শিক্ষকের নাম মোঃ নূরুল ইসলাম। তিনি বর্তমানে নৃপেন্দ্র নারায়ণ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

বুধবার ( ১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে দশটায় পৌর সদরের নৃপেন্দ্র নারায়ণ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সমানে থেকে কয়েক শত শিক্ষার্থী একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে চৌরাস্তায় হয়ে বিজয় চত্বরে আসে। পরে বিজয় চত্বরে একটি সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, নৃপেন্দ্র নারায়ণ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ নূরুলর ইসলাম গত ২০২১ সালে নৃপেন্দ্র নারায়ণ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে বদলি হয়ে আসেন এবং সে বছরই তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করাকালীন সময় তিনি সীমাহীন দুর্নীতিতে জড়িয়েছিলেন। তিনি তার দায়িত্বে থাকা অবস্থায় প্রতি বছরই শিক্ষার্থীদের টিফিন ফান্ড থেকে প্রায় ৫ মাসের টিফিনের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। কোন ধরনের বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম, বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি, কম্পিউটার ল্যাবের যন্ত্রপাতি এবং লাইব্রেরীর বই ক্রয় না করেই ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

শিক্ষার্থীরা আরও জানায়, গত ৩ বছর ধরে শিক্ষার্থীদের কাছে আইসিটি ও অত্যাবশ্যকীয় ফি'র নাম করে প্রতিমাসে মোটা অংকের টাকা উত্তোলন করেন এবং কোন রকম খরচ না করেই সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করেন। বিদ্যালয়ে কোন ধরনের কমন রুম, স্কাউট এবং রেডক্রিসেন্ট না থাকা সত্ত্বেও এই খাতগুলো চালু রেখে প্রতি বছর যে টাকা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উত্তোলন করা হয় তার পুরোটাই ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন তিনি। সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে তার প্রতি সপ্তাহে ১২ টি ক্লাস নেয়ার কথা থাকলেও শিক্ষক সংকট থাকা সত্ত্বেও তিনি কোন ক্লাস নেন না। এছাড়া প্রায়শই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে হয়রানি করেন।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, কিছু দিন আগে এই সব ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষকের নিকট অভিযোগ জানাতে গেলে তিনি সেনাবাহিনীকে খবর দিয়ে ক্যাম্পাসে ডেকে আনেন। পরে সেনাবাহিনীর ক্যাম্প কমাণ্ডার আমাদের অভিযোগগুলো শুনে সহকারী প্রধান শিক্ষককে দ্রুত তা সমাধানের পরামর্শ দেন।

শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সহকারী প্রধান শিক্ষক নূরুল ইসলামের সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির শাস্তি নিশ্চিত করা এবং অতিসত্বর ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে অন্যত্র বদলির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ও মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন ধরনের প্রতিকার না পেয়ে বাধ্য হয়ে রাজপথে নেমেছে তারা।

এবিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল মালেক বলেন, আমাকে কোন অভিযোগ দেয় নি কিংবা অভিযোগ পাই নি। ডাকযোগে অভিযোগ পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি দেখি আগে অভিযোগ, ছেলেদের সাথে কথা বলে দেখি তারপর মন্তব্য করবো।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের রংপুর অঞ্চলের উপ-পরিচালক শফিকুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এখনো অভিযোগ পাই নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave Your Comments